কোল কুড়মি কড়া, বেদ বিধি ছাড়া৷মাঝি মাহত ভাই ভাই৷
কুড়মির মাড়, ভুমিজের কাঁড়৷
-- --- ইত্যাদি ইত্যাদি সমূহ বহুল প্রচলিত প্রবাদ গুলি আদিবাসী সমাজের "হড় মিতান" জাতি গোষ্ঠীর সাথে বহু প্রাচীন কাল থেকেই একসাথে সুস্থ ভাবে বসবাস করার ইঙ্গিতেই বহন করে চলেছে।
খেরওয়াল বংশা 'ধরম পুঁথি' ও 'জমসিম বিনতি' শ্রুতি কথা অনুসারে, পুরাকালে এক ব্যাক্তির দুই স্ত্রী ছিলেন৷ বড় বৌ এর দুই সন্তান, যথা "কুড়মি" ও "মুন্ডা" এবং ছোট বৌএর পাঁচ সন্তান, যথাঃ সাঁওতাল, মাহলি, দেশওয়ালী, কড়া ও বিরহড৷ এই বিশ্বাস মতেই আজও "হড় মিত্র" গোষ্ঠী "শিখ শিখর নাগপুর, আধাআধি খড়গপুর" তথা সামগ্রিক ছোটনাগপুর মালভূমিতে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য নিয়ে বসবাস করে চলেছে। এ ছিল প্রাচীন কথা....... ইংরেজ শাসন কালেও আদিবাসী জনজাতি একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছে, প্রমাণ স্বরূপ বলা যায় ১৭৭৬ র চুয়াড় বিদ্রোহতে শহিদ রঘুনাথ মাহাত
১৮৩২ র ভুমিজ বিদ্রোহতে গঙ্গানারায়ন সিং র সাথে বুলি মাহাত
১৮৪৩ র ভীল বিদ্রোহতে বিশ্বনাথ সর্দার এর সাথে গোপাল মাহাত
১৮৫৫ র সাঁওতাল বিদ্রোহতে সিধু কানু চাঁদ ভইরব এর সাথে চানকু মাহাত র ও ফাঁসি হয়েছিল
সিপাহী বিদ্রোহতে মঙ্গল পান্ডের সাথে সুকদেব মাহাত
১৯১৭ র মালি আন্দোলন এ কংকা মাহাত
ইনারা সবাই জল জঙ্গল জমির জন্য লড়েছিলেন কিন্তু ইতিহাসে কুড়মি নেতাদের গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। স্বাধীনতার আন্দোলনে সব থেকে বেশি কুড়মি রাই বলিদান দিয়েছে কিন্তু অধিকার কিছুই পাইনি।
ঝাডখন্ড আন্দোলন হয়েছে সমস্ত আদিবাসীদের মিলিত প্রয়েসেই৷
বছর কয়েক আগে, যখন বাম সরকার মাওবাদী খোঁজার নামে সাঁওতাল মহিলা ছিতা মুর্মুর চোখ কানা করেছিল, পাশে দাঁড়িয়েছে ছত্রধর মাহাত, কয়েকদিন আগে যখন শালবনীর পাথরাজুডি গ্রামে ভুমিজদের পূজাস্থল ব্রাহ্মণবাদীরা দখল করলো..... প্রতিবাদে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন কৃষ্ণ কান্ত মাহাত৷ আদিবাসীদের মিলিত আন্দোলনের কারণে তৎকালীন ইংরেজ সরকার বাধ্য হয়েছিল "ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইন" (1908) লাগু করতে......... অনুরূপেই অন্যান্য আদিবাসী জনগোষ্ঠী'র সাথে সাথে কুড়মি'রাও ভারতবর্ষের প্রথম জনগননা 1872 সাল থেকেই আদিবাসী তথা এস.টি. হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে আসছে।
স্বাধীন ভারতের এস.টি. তালিকা তৈরী হয়েছে 1913 সালের সেনসাস রিপোর্ট অনুসারে যেখানেও কুড়মি সহ মোট তেরটি জাতি এস.টি. হিসাবে উল্লিখিত রয়েছে৷
স্বাধীন ভারতের কুড়মি জাতি আদিবাসী তালিকায় নেই। স্বাধীকার প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে আন্দোলন করে চলেছে। এতেই কিছু লোক উসকানি দিচ্ছেন "হড় মিতান" আদিবাসীদের কুড়মি যেন আদিবাসী স্বীকৃতি না পায় তার বিরোধিতা করার জন্য৷ যা সামগ্রিক আদিবাসীদের হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, স্বাধীন ভারতে কনো জাতির উপর কালচারেল রিসার্চ ইনভেস্টিগেশন করে এস.টি. লিষ্ট তৈরি হয়নি, কোর্ট কাছারি হলে 1913 সালের নোটিশটিই বাদ হতে পারে। আরও লক্ষণীয় যে তৎকালীন তেরটি থেকে বর্তমানে 40টি জাতি এস.টি.র সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। নতুন জাতি ঐ তালিকায় আসার সময় কেউ বিরোধিতা করেন নাই, তবে কুড়মির বেলা এত জ্বালা কেন??
১-মধ্য হিমালয়ের থারু রা নিজেদেরকে"ঠাকুর
বন্ধু,
কুড়মির কাজ কুড়মিকে করতে দিন.......
মনে রাখবেন "কুড়মি" আর কুর্মী ক্ষত্রিয় এক নয়৷
সম্প্রীতি বজায় রাখুন।
আদিবাসী ঐক্য জিন্দাবাদ!!!!
সারি-সারনা জিৎকার৷
লেখা-ভুপেন মাহাত
ভালো লাগল
ReplyDelete